সংবাদ প্রতিদিন ডেস্ক:
জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-সিলেট সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও খামখেয়ালিয় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। যোগাযোগের প্রধান অবলম্বন জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-সিলেট সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বারবার সড়ক সংস্কারের দাবিতে এলাকাবাসী ও পরিবহন মালিক শ্রমিকরা ধর্মঘট করলেও কাজ হয়নি।এ পর্যন্ত ৮ম বারের মতো এই সড়ক সংস্কারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট ডাকলেও কোনো কাজ না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বেহাল এই সড়কটিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ না হওয়ায় বড় বড় গর্ত হয়ে সড়কটি বর্তমানে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বড় বড় গর্তে গাড়ি উলটে খাদে পড়ে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যে সড়কের গর্তে পড়ে ৩টি ডেলিভারির ঘটনা ঘটেছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ।
সিলেট বিভাগীয় শহরসহ রাজধানী ঢাকার সঙ্গে জগন্নাথপুর ও সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কয়েকলাখ মানুষ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে আসছেন। ২০১৭ সালে জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ সড়কের জগন্নাথপুরের ১৩ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের জন্য প্রায় তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ওই সময় কিছু কাজ করে পরে রহস্যজনকভাবে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। কাজের ৪ মাসের মাথায় সড়কের পিচঢালাই ওঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়।
২০১৮ সালে ১০ লাখ টাকার জরুরি সংস্কার করা হয়। পর ২০১৯ সালে সড়কের বেহাল দশা দেখা দিলে মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সড়কে অস্থায়ী মেরামতের জন্য ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। তখনও সংস্কারে গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালের শেষের দিকে ওই সড়কের জগন্নাথপুর উপজেলা অংশের ১৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য ২৫ কোটি টাকার টেন্ডার আহবান করা হয়। চুক্তি মোতাবেক আগামী বছরের ৩১ মার্চ কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু দেশে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবে বন্ধ হয়ে যায় কাজ। সম্প্রতি ঝড়-বৃষ্টির সময় সামান্য ফের বন্ধ করে দেওয়া হয় সড়কের কাজ। অব্যাহত বৃষ্টি আর বন্যায় বিশাল বিশাল বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে অচল হয়ে পড়েছে সড়কটি। এমতাবস্থায় টেকসই সড়ক নির্মাণের দাবিতে জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিজামুল করিম সিলেটভিউকে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কারের অভাবে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সংস্কারের দাবিতে আমরা একাধিকবার পরিবহন ধর্মঘট করলেও আমাদের কথা কেউ শুনছে না। সংস্কারের আশ্বাসে কর্মসূচি বারবার প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার সাকলাইন হোসেন জানান, করোনা ও বৃষ্টির কারণে সংস্কার কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, এলজিইডির তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংক আইডিএর অর্থায়নে জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-সিলেট সড়কের জগন্নাথপুর থেকে কেউনবাড়ী পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য ২৫ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। করোনা মহামারী, বন্যা, ভারতের এলসি বন্ধ থাকায় ভালো মানের পাথর পাওয়া যাচ্ছে না। এ সব কারণে কাজে বিঘ্ন ঘটছে। এবার যাতে সড়কের কাজ মানসম্মত ও টেকসই হয়- এ ব্যাপারে সচেতনভাবে আমরা কাজ করছি।
এ দিকে বিশ্বনাথ উপজেলা প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেহাল এই সড়কটিতে এবার যাতে লুটপাট না করে টেকসই ও মানসম্মত কাজ হয় সে ব্যাপারে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন